বায়োলুমিনেসেন্স কী এবং কোথায় ঘটে?
বায়োলুমিনেসেন্স হলো একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যেখানে জীবিত প্রাণী নিজে থেকে আলো উৎপন্ন করে। এই আলোক উৎপাদনের জন্য সাধারণত একটি রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ঘটে, যেখানে প্রাণীর দেহে থাকা লুসিফেরিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ অক্সিজেনের সাথে প্রতিক্রিয়া করে আলো সৃষ্টি করে। বায়োলুমিনেসেন্স প্রাণীদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক এবং যোগাযোগের প্রক্রিয়া হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
বায়োলুমিনেসেন্স কোথায় ঘটে?
বায়োলুমিনেসেন্স বেশ কয়েকটি স্থানে এবং বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে দেখা যায়:
সামুদ্রিক প্রাণীদের মধ্যে:
বায়োলুমিনেসেন্সের বেশিরভাগ উদাহরণ সমুদ্রের গভীরে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, জেলিফিশ, গভীর সমুদ্রের মাছ, এবং কিছু প্রজাতির প্ল্যাঙ্কটন বায়োলুমিনেসেন্ট। সমুদ্রের গভীর স্তরে, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, সেখানে এই আলো তাদের শিকার ধরতে, শত্রু থেকে আত্মরক্ষা করতে বা সঙ্গীর সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে।
স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে:
স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে বায়োলুমিনেসেন্সের কিছু সাধারণ উদাহরণ হলো জোনাকি পোকা (fireflies) এবং গ্লো ওয়ার্ম। এই প্রাণীগুলি প্রায়ই রাতে জ্বলে ওঠে এবং তাদের আলো ব্যবহার করে সঙ্গীকে আকর্ষণ করে বা শত্রুদের থেকে আত্মরক্ষা করে।
কিছু ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া:
কিছু ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়াও বায়োলুমিনেসেন্স করতে সক্ষম। এই ছত্রাকগুলির আলো প্রায়শই রাতে গাছের কাণ্ড বা মাটির উপরে দেখা যায়।
বায়োলুমিনেসেন্সের উদ্দেশ্য:
প্রতিরক্ষা: অনেক প্রাণী বায়োলুমিনেসেন্স ব্যবহার করে শত্রুদের বিভ্রান্ত করতে বা দূরে রাখতে।
শিকার ধরা: কিছু সামুদ্রিক প্রাণী তাদের শিকারকে আকর্ষণ করতে আলোর ব্যবহার করে।
যোগাযোগ: জোনাকির মতো প্রাণীরা সঙ্গীকে আকর্ষণ করতে এই আলো ব্যবহার করে।
বায়োলুমিনেসেন্স একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক ঘটনা, যা প্রাণীদের জীবনযাত্রায় বিভিন্নভাবে ভূমিকা পালন করে।