বিদ্যুৎ কীভাবে উৎপন্ন হয়?
বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার প্রক্রিয়া বিভিন্ন উপায়ে ঘটে, এবং এটি বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও শক্তির উৎসের উপর নির্ভর করে। এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কিছু সাধারণ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো:
১. জলবিদ্যুৎ
পদ্ধতি: জলবিদ্যুৎ প্ল্যান্টে নদী বা জলাধারের পানির প্রবাহ ব্যবহার করা হয়। পানির প্রবাহের শক্তি টারবাইনকে চালিত করে, যা জেনারেটরকে ঘোরায়।
উৎপাদন: পানির শক্তি ঘূর্ণনশীল শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং পরে বিদ্যুতে পরিণত হয়।
২. তাপবিদ্যুৎ
পদ্ধতি: কয়লা, গ্যাস, বা তেল পোড়ানোর মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন করা হয়। এই তাপ পানি গরম করে স্টিম উৎপাদন করে।
উৎপাদন: উৎপন্ন স্টিম টারবাইনকে চালিত করে, যা জেনারেটরকে ঘোরায় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
৩. নবায়নযোগ্য শক্তি
সৌর শক্তি: সৌর প্যানেলের মাধ্যমে সূর্যের আলো সরাসরি বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
বায়ু শক্তি: বায়ুর গতির শক্তি টারবাইনগুলিকে চালিত করে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
জিওথার্মাল শক্তি: পৃথিবীর গভীরের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
৪. পারমাণবিক শক্তি
পদ্ধতি: পারমাণবিক ফিশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরমাণুর নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়, যা বিশাল পরিমাণ তাপ উৎপন্ন করে।
উৎপাদন: এই তাপ পানিকে গরম করে স্টিম উৎপাদন করে, যা টারবাইন চালনা করে।
৫. ফসিল ফুয়েল
কয়লা, তেল, এবং গ্যাস: এই উৎসগুলির পোড়ানোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।
পদ্ধতি: ফসিল ফুয়েলের শক্তি তাপ উৎপাদনে রূপান্তরিত হয় এবং পরে টারবাইনকে চালিত করে।
৬. বায়োএনার্জি
পদ্ধতি: জৈব পদার্থ যেমন কাঠ, আবর্জনা বা গাছের চিপস পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
উৎপাদন: বায়োএনার্জি থেকে উৎপন্ন তাপ জলীয় বাষ্প তৈরি করে, যা টারবাইন চালনা করে।
৭. টলটাল প্রক্রিয়া
পদ্ধতি: উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পাওয়ার গ্রিডের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো হয়।
উপসংহার
বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকারের শক্তি উৎসের উপর নির্ভর করে এবং প্রতিটি পদ্ধতির নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। আধুনিক যুগে, নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের গুরুত্ব বাড়ছে, যা পরিবেশের উপর প্রভাব কমাতে সহায়ক। বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শক্তির প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়।